উল্লাসের শহর (City of Joy)



ছেঁড়া পকেটের ফাঁকে পালাই মর্যাদার টোকেন,

হাঁটতে হাঁটতে পথ ফেলে যায় দুপুরের টানে,

পিছু ডাকে তোমার স্মৃতির হাহাকার,

মুছতে পারেনি তোমার রেখা আমার নিদ্রাহীন জীবনে।


ছ-মাইলও দেখতে দেখতে কেটে যায় সময়ের কানা খেলায়,

চোখে পড়ে ক্ষুধার্ত ভিখিরির তৃষ্ণা - শূন্য প্রতিকার,

শ্যামলও আজ হয়তো মারা পড়েছে কালের হিংস্র কোপে,

ঝাড়বাতি ভুলে জীবনে নেমে এসেছে অচেনা গলির অন্ধকার।


সামনে আসে রবীন্দ্র সদনের সেন্ট্ পল্স্ ক্যাথেড্রাল,

যীশুর ক্লীব আভাসের শিরদাঁড়া ছিঁড়ে ফাটিয়ে ওঠে চিৎকার,

কাঁদছে নিখিল এখনও, পিছে পরে যাওয়ার আর্তনাদে, ঝড়ে যাওয়া গাছটার নিচে,

কানা মাছি খেলার অভ্যেস এখনও বাইরে তার দক্ষতার।


পাশে রয়েছে অ্যাকাডেমি অফ্ ফাইন্ আর্টসের নিরবে লুকিয়ে থাকা কবিদের শোক,

বাপের অসুকের মাঝে পরিবার টেনে দুক্ষবিলাস তাদের আবিষ্কার,

আকা বাঁকা লাইনের মাঝে শিউরে ওঠে সতীনের এক রাশ ক্ষোভ,

রাত নামলেই ফুলকি বিড়ি সিগারেটের সাইকেডেলিক চিন্তার।


ঝাঁটা লাথি খেয়ে মৃত কুকুরের দেহটাও কথা বলে,

ভেসে যায় অখিলের শেষ কান্নায়, পোড়ে শুধু তার অলঙ্কার,

খ্যাপার শহরে তাও হয় নিরন্তর বেচা কেনা,

দুধে জল গুরে বালি ব্যর্থ নিবারণ চেষ্টার।


বাসে ঝুলতে ঝুলতে চাপে চাপ খেয়ে আরো বেশি চাপে ঝুলে গেল সুরেন,

মোড়কের আরামে দায়িত্বহীন, লম্পট, কাপুরুষ, ইত্যাদি বলে ওঠে সংসার,

লক্ষ্মী মাসিমা লক্ষ্মী ভুলে রুটি বেলে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের গেটে,

বিকি পয়সার অভাবে ইলেকট্রিকহিন সুরেনের পরিবার।


এমনই শহরে উল্লাসের ডালে ঝড়ে সবুজ পাতা বেদনার শরতে,

ভ্যালেন্টাইন গোলাপের দামে জোটে খগেনের নুন পান্তা ভাতে,

সফেদ মর্যাদার সমুখে দোলে ছোটলোকদের প্রেমের ঝুমকা রুপর,

ভিক্টোরিয়াও সুন্দর কালো পিশাচের প্রতিপালনে।

Comments